মধ্যপাড়া পাথরখনিতে রেকর্ড পরিমাণ পাথর উত্তোলন হচ্ছ
নিজস্ব প্রতিবেদক: দিনাজপুরের মধ্যপাড়া পাথরখনিতে বেড়েই চলেছে পাথর উত্তোলন। প্রতিমাসেই লক্ষ্যমাত্রার বেশি রেকর্ড পরিমাণ পাথর উত্তোলন হচ্ছে। পাশাপাশি দৈনিক উত্তোলন ছাড়িয়ে গেছে ছয় হাজার টন। যা অতীতের যেকোনও সময়ের চেয়ে বেশি। অথচ একটা সময় এখানে দৈনিক পাথর উত্তোলনের পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছিল মাত্র ৫শ’ মেট্রিক টনে।
জানা গেছে, দেশের একমাত্র পাথরখনি দিনাজপুরের মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড (এমজিএমসিএল) বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করে ২০০৭ সালের ২৫ মে। প্রথম অবস্থায় খনি থেকে দৈনিক এক হাজার ৫শ’ থেকে এক হাজার ৮শ’ টন পাথর উত্তোলন হলেও পরে তা নেমে আসে মাত্র ৫শ’ টনে। উৎপাদনে যাওয়ার পর থেকে ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত লোকসানের পরিমাণ দাঁড়ায় শতকোটি টাকার উপরে। এমন অবস্থায় উৎপাদন বাড়াতে ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ৯২ লাখ মেট্রিক টন পাথর উত্তোলনের বিপরীতে ১৭১.৮৬ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি করে খনির উৎপাদন ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয় বেলারুশের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জার্মানিয়া ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম-জিটিসি’কে। জিটিসি সূত্রে জানা যায়, তারা দায়িত্ব পাওয়ার পর খনির উন্নয়ন ও উৎপাদনে দুই শতাধিক বিদেশি খনি বিশেষজ্ঞ, দেশি প্রকৌশলী, সাত শতাধিক দক্ষ শ্রমিক এবং দুই শতাধিক কর্মকর্তা তিন শিফটে নিরলসভাবে কাজ শুরু করেন। প্রতি মাসে উৎপাদনে নতুন নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করে পাথর খনিটিকে সরকারের লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করছে জিটিসি। প্রতিদিন তিন শিফটে এখানকার পাথর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ৫ হাজার মেট্রিক টন। প্রায়ই লক্ষ্যমাত্রার বেশি ৬ হাজার টনের বেশি উৎপাদন করছে প্রতিষ্ঠানটি।
জানা গেছে, চুক্তিবদ্ধ হওয়ার পর লোকসানি এই প্রতিষ্ঠানটি পরপর পঞ্চম বার লাভের মুখ দেখেছে। সরকারের জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা পেলে জিটিসি খনির উন্নয়ন এবং পাথর উত্তোলনের এই রেকর্ড অব্যাহত রাখতে পারবে, যা দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।
খনি সূত্রে জানা যায়, দেশে প্রতি বছর ছয় হাজার কোটি টাকার (প্রায় এক কোটি ৫০ লাখ টন) পাথরের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১০ লাখ টন সরবরাহ হয়ে থাকে মধ্যপাড়া খনি থেকে। সুষ্ঠুভাবে খনিটি পরিচালনা করা গেলে মধ্যপাড়া খনি আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার ধারা অব্যাহত থাকবে।
মধ্যপাড়া পাথরখনির কোম্পানি সচিব মোছা. সালাতেয়ারা বেগম বলেন, ‘এখন আমাদের এখানে মজুত রয়েছে ৯ লাখ টনেরও অধিক পাথর। যেসব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মধ্যপাড়া পাথরখনির পাথর ব্যবহার করতে চায় তাদের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে। তা ছাড়া এখন দৈনিক ৬ হাজার টনেরও অধিক পাথর উত্তোলন হচ্ছে। এটি আমাদের জন্য একটি ভালো বিষয়। এতে সরকারি এই প্রতিষ্ঠানটি আরও লাভের মুখ দেখবে।’
Sharing is caring!