২২শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৯ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৪শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

অবলোপন করা ঋণ আদায়ের ৫ শতাংশ পাবেন কর্মকর্তারা

admin
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৪, ০৬:৩৫ পূর্বাহ্ণ
অবলোপন করা ঋণ আদায়ের ৫ শতাংশ পাবেন কর্মকর্তারা

স্টাফ রিপোর্টার:
খেলাপি ঋণ কমাতে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ঋণ অবলোপন নীতিমালা শিথিল করল বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন থেকে তিন বছরের পরিবর্তে টানা দুই বছর মন্দ ও ক্ষতিজনক মানে শ্রেণীকৃত ঋণ অবলোপন করা যাবে। এ ধরনের ঋণ আদায় জোরদারের জন্য সরাসরি এমডির তত্ত্বাবধানে ‘অবলোপনকৃত ঋণ আদায় ইউনিট’ গঠন করতে হবে। আদায় করা অর্থের ৫ শতাংশ প্রণোদনা হিসেবে পাবেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। গতকাল এ নীতিমালা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক খাত সংস্কার ও উচ্চ খেলাপি ঋণ কমাতে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক একটি পথনকশা ঘোষণা করে। সেখানে বলা হয়, অবলোপনের মাধ্যমে ৪৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ কমানো সম্ভব। আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চা অনুসরণ করতে অনাদায়ী ঋণ অবলোপন এবং অবলোপন করা ঋণ আদায়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, এমডির সরাসরি তত্ত্বাবধানে গঠিত ইউনিটে ঋণ আদায়ে দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের বহাল করতে হবে। সেখানে আইন বিষয়ে ডিগ্রিধারী অন্তত একজন কর্মকর্তাকে রাখতে হবে। অবলোপন করা ঋণ আদায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এমডি পদে পুনর্নিয়োগের ক্ষেত্রে কর্ম উৎকর্ষের অন্যতম মানদণ্ড হিসেবে বিবেচনা করা হবে। প্রতি মাসে এমডির সভাপতিত্বে অবলোপনকৃত ঋণ আদায় ইউনিট থেকে মাসিক ভিত্তিতে সভা আয়োজন করতে হবে। মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য দক্ষ এবং খেলাপি ঋণ-সংক্রান্ত মামলা পরিচালনায় অভিজ্ঞ আইনজীবী নিয়োগসহ অন্যান্য ব্যবস্থা নিতে হবে। নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, অবলোপন করা ঋণের বিপরীতে আদায় করা অর্থের ৫ শতাংশ প্রণোদনা হিসেবে সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে বিতরণ করতে হবে। বিতরণ করা অর্থের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পাবেন এমডি। বাকি অর্থ ওই ইউনিটের প্রধানসহ অন্য কর্মকর্তারা পাবেন। আর যে শাখা বা বিভাগের ঋণ আদায় হবে, সেখানে সরাসরি সম্পৃক্ত কর্মকর্তাও আনুপাতিক হারে প্রণোদনা পাবেন। ভবিষ্যতে অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি কার্যকর হলে অবলোপন করা ঋণ বিক্রি করা যাবে। এ ক্ষেত্রে পুরো অর্থ আয় খাতে স্থানান্তর করতে হবে। নীতিমালা অনুযায়ী পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন নিয়ে টানা দুই বছর মন্দ ও ক্ষতিজনক মানে শ্রেণীকৃত ঋণ অবলোপন করা যাবে। তবে ঋণের শ্রেণিমান যাই হোক, মৃত ব্যক্তির নিজ নামে অথবা একক মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে নেওয়া ঋণ অবলোপন করা যাবে। তবে একক মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে মৃত ব্যক্তির উপার্জনক্ষম উত্তরসূরি আছে কিনা, তা বিবেচনায় নিতে হবে। অবলোপনের আগে স্থগিত সুদ বাদে বাকি ঋণস্থিতির সমপরিমাণ প্রভিশন রাখতে হবে। বন্ধকি সম্পত্তি বিক্রি এবং গ্যারান্টারের কাছ থেকে পাওনা আদায় করতে না পারলে সেই ঋণ অবলোপন করা যাবে। এখনকার মতোই মামলা ছাড়া ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ অবলোপন করা যাবে। তবে কোনো ঋণের আংশিক অবলোপন করা যাবে না। অবলোপন করা ঋণ পুনঃতপশিল বা পুনর্গঠন করা যাবে না। শুধু এক্সিট প্ল্যানের আওতায় পরিশোধসূচি নির্ধারণ করা যেতে পারে। সম্পূর্ণ ঋণ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত যথানিয়মে খেলাপি হিসেবে সিআইবিতে রিপোর্ট করতে হবে। ব্যাংকের পরিচালকের ঋণ সাধারণভাবে অবলোপন করা যাবে না। তবে মৃত্যুসহ অন্যান্য কারণে কোনো ঋণ অবলোপনের আবশ্যকতা দেখা দিলে ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা বিভাগ থেকে সুনির্দিষ্টভাবে কারণ উল্লেখ করে প্রতিবেদন দেবে। এর পর ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন নিতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমতি নিয়ে অবলোপন কার্যকর করতে হবে।

Sharing is caring!