১৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২১শে শাওয়াল, ১৪৪৬ হিজরি

হাসপাতালের লিফটে আটকা পড়ে রোগীর মৃত্যুর

admin
প্রকাশিত মে ১২, ২০২৪, ০৯:৫৬ পূর্বাহ্ণ
হাসপাতালের লিফটে আটকা পড়ে রোগীর মৃত্যুর
এনবি ডেস্ক: গাজীপুরে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের লিফটে আটকা পড়ে মমতাজ বেগম নামে এক রোগীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। আজ রবিবার সকালে হাসপাতালের ৩ নম্বর লিফটে এ ঘটনা ঘটে। পরে জয়দেবপুর ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা আটকে পড়া ওই নারীর মরদেহসহ বাকিদের উদ্ধার করেন।
এ ঘটনায় লিফট অপারেটরদের বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ তুলেছেন মৃত রোগীর স্বজনরা।
মৃত ৫০ বছর বয়সী মমতাজ বেগম গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের বাড়িগাঁও গ্রামের শারফুদ্দিনের স্ত্রী।
মমতাজের ভাগ্নে খন্দকার শাহদত হোসেন সেলিম বলেন, ‘তার মামি মমতাজ বেগম শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগের সমস্যায় ভুগছিলেন। সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ওই হাসপাতালের ১১ তলার মেডিসিন বিভাগে ভর্তি হন তিনি। পরে সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে একই ভবনের চতুর্থ তলায় কার্ডিওলজি বিভাগে ট্রান্সফার করেন।’
তিনি বলেন, ‘মামি হাঁটাচলা করতে পারলেও তাকে দ্রুত হৃদরোগ বিভাগে নেওয়ার জন্য ট্রলিতে ওঠানো হয়। পরে মামি, তার ছেলে আব্দুল মান্নান ও মেয়ে শারমিনসহ আমরা হাসপাতালের ৩ নম্বর লিফটে উঠি। লিফট হাসপাতালের নবম ও দশম তলার মাঝমাঝি থাকা অবস্থায় হঠাৎ ঝাঁকুনি দিয়ে থেমে যায়। তখন সকাল সাড়ে ৯টার মত বাজে। তখন আমি লিফটে থাকা মোবাইল নম্বরে একাধিক ব্যক্তিকে বারবার ফোন করলেও তারা কর্ণপাত করেনি। উপরন্তু বার বার ফোন করায় তারা বিরক্ত হয়ে আমাদের গালিগালিজ করেন। এক পর্যায়ে মামি ছটফট করতে শুরু করলে আবারও অপারেটরদের এবং জরুরি সেবা নম্বর-৯৯৯ এ ফোন করি। আটকে থাকার ৪৫ মিনিট পর এক পর্যায়ে কয়েকজন অপারেটর গিয়ে দরজা কিছুটা ফাঁক করে আবার দরজা বন্ধ করে চলে যায়। এ সময় অনেক কষ্টে আমরা তিনজন বেরিয়ে আসতে পারলেও মামিকে বের করা সম্ভব হয়নি।’
পরে ৯৯৯ নম্বরে পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থল যায়। কিন্তু ততক্ষণে লিফটের ভেতরই মমতাজ বেগম মারা যান বলে তার ভাগ্নে জানান। তিনি বলেন, ‘জয়দেবপুর ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা দরজা খুলে মামির লাশ উদ্ধার করে। যদি সঠিক সময়ে তাকে উদ্ধার করা হতো তা হলে হয়তো বাঁচানো যেতো।’
এর আগে ৪ মে হাসপাতালের ১২ তলার ভেতরের দেয়াল ও মেঝের মধ্যে থাকা ফাঁকা স্থান দিয়ে এক রোগী ১০ তলায় পড়ে গিয়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ওই ঘটনার সপ্তাহ না ঘুরতেই আবার এ দুর্ঘটনায় মমতাজ বেগম মারা গেলেন।
লিফটে আটকে পড়ে রোগীর মৃত্যুর খবরের সত্যতা স্বীকার করে হাসপাতালের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে জানা গেছে হাসপাতালে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে হঠাৎ বিদ্যুৎ চলে গেলে লিফটে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। এ সময় হাসপাতালের নবম তলায় লিফটি থেমে গেলে রোগী মমতাজ ও তার কয়েকজন স্বজন আটকা পড়েন। পরে লিফটের অপারেটর ও জয়দেবপুর ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা ঘটনার ১৫-২০মিনিট পরে মমতাজের লাশ ও তার স্বজনদের উদ্ধার করে।’
তিনি বলেন, ‘এ ঘটনা খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্তে কারও গাফিলতি ধরা পড়লে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Sharing is caring!