এনবি ডেস্ক: জুলাই বিপ্লবে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির দুই ছাত্র শহীদ শাকিল পারভেজ ও শহীদ আহনাফ আবির আশরাফুল্লাহর শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে “ক্যাম্পাস থেকে রাজপথ: জুলাই আন্দোলনে প্রাাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা” শীর্ষক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জুলাই বিপ্লব ২০২৪ স্মরণে পক্ষকালব্যাপী অনুষ্ঠানমালার অংশ হিসেবে শনিবার (২ আগস্ট ২০২৫) বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুলিয়া স্থায়ী ক্যাম্পাস মিলনায়তনে উক্ত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবদুর রব এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও জুলাই যোদ্ধা আসিফ মাহতাব উৎস।
আন্দোলনে নারীদের অবদান নিয়ে বক্তব্য রাখেন লেখিকা ও সমাজকর্মী মালিহা নামলা।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন শহীদ শাকিল পারভেজের পিতা বেলায়েত হোসেন, শহীদ আহনাফের বড় বোন অ্যাডভোকেট সাইয়েদা আকতার এবং আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে চোখ হারানো বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্র সাইফ আরেফিন রাহাত।
জুলাই বিপ্লবের স্মৃতিচারণে বক্তব্য দেন শহীদদের সহপাঠী ও সহযোদ্ধা ইইই বিভাগের ছাত্রী মাসুদা খাদিজা, আইন বিভাগের ছাত্র ওয়ালিদ বিন জামাল, ইংরেজি বিভাগের ছাত্রী সিরাজাম মুনিরা, ফার্মেসি বিভাগের খালেদ সাইফুল্লাহ মুরাদ এবং ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ছাত্র আতিক হাসান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবদুর রব বলেন, “দুই বছর অপদখলে থাকার পর শহীদদের রক্তের বিনিময়ে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি পুনরায় মুক্ত হয়েছে। এই আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মানারাত পরিবার সবসময় শহীদ পরিবারের সুখে-দুঃখে পাশে থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাই যোদ্ধাদের আত্মত্যাগ আমাদের ভবিষ্যতের পথচলার প্রেরণা। তাদের স্মৃতি আমাদের হৃদয়ের মণিকোঠায় ধারণ করে আমরা সবাই মিলে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে উচ্চশিক্ষার অঙ্গনে এগিয়ে নিয়ে যাব।”
ছেলে শহীদ শাকিল পারভেজের দ্রুত হত্যার বিচার দাবি করে তার পিতা বেলায়েত হোসেন বলেন, “আমরা শহীদ শাকিল, শহীদ আহনাফ, সায়ীদ, মুগ্ধসহ সব শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আছি। এই রক্তের ঋণ শোধ করতে হলে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ ও জাতিকে সঠিক পথে এগিয়ে নিতে হবে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং সত্যের পক্ষে দাঁড়ানোর এই যাত্রা থেমে গেলে শহীদদের আত্মত্যাগ বৃথা যাবে।”
শহীদ আহনাফের বোন অ্যাডভোকেট সাইয়েদা আকতার বলেন, “আহনাফ সবসময় স্বপ্ন দেখতো এক দুর্নীতিমুক্ত, ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্রের। অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে তার ছিল অসীম ঘৃণা। সেই স্বপ্ন ও আদর্শ বাস্তবায়নের লক্ষ্যেই সে দেশের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করেছে। এখন আমাদের দায়িত্ব তার সেই স্বপ্ন পূরণে নিজ নিজ অবস্থান থেকে লড়াই করে যাওয়া।”
অনুষ্ঠানে শহীদ শাকিল পারভেজ ও শহীদ আহনাফের স্মরণে ব্যবসায় প্রশাসন ও ইইই বিভাগের শিক্ষার্থীদের নির্মিত তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। পরে শহীদ শাকিলের পিতা এবং শহীদ আহনাফের মাতার হাতে সম্মানসূচক অর্থ পুরস্কার তুলে দেন উপাচার্য।
শহীদদের আত্মার মাগফিরাত ও আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনায় মোনাজাত পরিচালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্টস অ্যান্ড হিউম্যানিটিজ স্কুলের ডিন অধ্যাপক ড. আবু আইয়ুব মো. ইব্রাহিম।
Sharing is caring!