রাজিবুল হক সিদ্দিকী , কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ঈদ-উল-ফিতরের জামাত। এ জামাতে তিন লক্ষাধিক মুসল্লি একসঙ্গে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেন।
শোলাকিয়া মাঠের জামাতের প্রতি মুসল্লিদের আকর্ষন ও অংশগ্রহন ক্রমেই বাড়ছে। ফলে প্রতি বছরই জামাতের কলেবর বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর সঙ্গে ছড়িয়ে পড়েছে মাঠের সুনাম। মুসুল্লীদের নিরাপদে জামাত আদায়ের জন্য প্রস্তুত দেশের বৃহত্তম শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ।
শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানের আকর্ষনীয় ও বিশাল জামাত গৌরবময় ও ঐতিহ্যবাহী করেছে কিশোরগঞ্জকে। শোলাকিয়া ঈদগাহের জামাত উপমহাদেশের বৃহত্তম ঈদ জামাত হিসেবে বিবেচিত। শোলাকিয়া ঈদগাহ কিশোরগঞ্জ শহরের পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত।
মসনদ-ঈ-আলা ঈশা খাঁর ৬ষ্ঠ বংশধর দেওয়ান হয়বত খানের উত্তরসূরী দেওয়ান মান্নান দাদ খান ১৯৫০ সালে ৪.৩৫ একর ভূমি শোলাকিয়া ঈদগাহকে ওয়াকফ দেন। পরবর্তীকালে ঈদগাহ পরিচালনা ও উন্নয়ন কমিটির কাছে হাতবদল করায় এ মাঠের বর্তমান জমির পরিমাণ প্রায় ৭.০০ একর।
জনশ্রæতি আছে যে, শোলাকিয়া ঈদগাহের প্রথমে বড় জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লি অংশগ্রহণ করেছিলেন। উচ্চারণের বিবর্তনে সোয়ালাখিয়া থেকে বর্তমান শোলাকিয়া নামে ঈদগাহটি পরিচিতি লাভ করে। ১৮২৮ খ্রিঃ জঙ্গলবাড়ির জমিদার সাহেবও এ মাঠে নামাজ পড়তে আসে ঈদ-উল-ফিতরের ১৯৭তম বড় জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
১৮২৮ খ্রিঃ অনুষ্ঠিত প্রথম বড় জামাতের ইমামতি করেন শোলাকিয়ার সুফি সৈয়দ আহমদ। আন্তর্জাতিক ও বরকতময় শোলাকিয়া ঈদগাহে যুগে যুগে খ্যাতনামা আলেমগণ ইমামের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ২শত ৬৫টি কাতার সংবলিত শোলাকিয়া ঈদগাহে প্রতি বছর লাখ লাখ মুসল্লির সমাবেশ ঘটে।
এবারও ঈদ জামাতে ইমামতি করবেন মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ এবং বিকল্প ইমাম হিসেবে থাকবেন মাওলানা সোয়াইব বিন আঃ রউফ।
বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ঈদ-উল-ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ঈদ-উল-ফিতরের জামাত শোলাকিয়া ঈদগাহে অনুষ্ঠানের ফলে আজ এটি ঐতিহাসিক স্থানে পরিণত। এর গুরুত্ব বেড়ে গেছে বহুগুণ। তাই সবার দৃষ্টি আজ এ ময়দানের প্রতি।
এ কারণে সময়ে দাবি একে আরো আকর্ষণীয় ও উপযোগী করে তোলার।এখানে একটি পাঞ্জেগানা মসজিদ ও মক্তব চালু আছে। মাঝে মাঝে ইমাম সাহেব এ মাঠে আওলিয়া সম্মেলনের আয়োজন করেন। ঈদগাহটি একটি বহুমুখী ইসলামী কার্যক্রমের কমপ্লেক্স এ পরিণত হওয়া প্রয়োজন।
শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠ পরিচালনা কমিটির সভাপতি কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, বলেন বৃহত্তম ঈদগাহ মাঠের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ঈদের জামাতে অতিরিক্ত নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও বাড়তি পুলিশ বিজিবি মোতায়েন করা হবে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ পিপিএম (বার) জানান, শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার ঘটনার পর থেকে পুলিশ, র্যাব মোতায়েনসহ চার স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হবে। এবারের জামাতে শুধু জায়নামায ছাড়া মোবাইলসহ অন্য কিছু জিনিস সঙ্গে আনা যাবে না নিরাপত্তার স্বার্থে।
এদিকে শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতে অংশগ্রহনের সুবিধার্থে ভৈরব-কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ লাইনে ‘শোলাকিয়া এক্সপ্রেস’ নামে দুটি স্পেশাল ট্রেন চলাচল করবে।
Sharing is caring!